লক্ষ্মীপুরে স্কুলে আয়া নিয়োগে কলেজছাত্রী দিয়ে সাজানো পরীক্ষা !

শেয়ার

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়া নিয়োগে কলেজছাত্রীকে দিয়ে সাজানো পরীক্ষার অভিযোগ উঠেছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে যোগ্য প্রার্থীর খাতা গায়েব করে তার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলমের বিরুদ্ধে। এছাড়াও নিরাপত্তা কর্মী ও অফিস সহায়ক নিয়োগেও করা হয়েছে অনিয়ম।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রয়াত এক মুক্তিযোদ্ধার বিধবা মেয়ে জান্নাত বেগম। অভিযোগের আলোকে তদন্ত চলছে।
সোমবার (১৮অক্টোবর) সকালে ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে জান্নাত বেগম স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এসব অনিয়মের কথা জানান।

জান্নাত বেগম উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল মজিদ তালুকদারের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে তার স্বামী মারা গেছে। বর্তমানে এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ভুক্তভোগী ও অভিযোগ সূত্র জানা যায়, গত ২৯ আগস্ট তারিখের একটি পত্রিকায় আয়া, নিরাপত্তা কর্মী ও অফিস সহায়ক এ তিন পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তির আলোকে জান্নাত বেগম আয়া পদে আবেদন করেন। আবেদন পেয়ে প্রধান শিক্ষক লোক মাধ্যমে জান্নাতের কাছে নিয়োগের জন্য এক লাখ টাকা দাবী করেন। জান্নাত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে প্রধান শিক্ষক তিনজন কলেজছাত্রীসহ আয়া পদে ৫জনকে দিয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ল²ীপুরে একটি সাজানো পরীক্ষার আয়োজন করেন। ওই নিয়োগে জান্নাত বেগমের পরীক্ষার খাতা গায়েব করে তিনি তার পছন্দের প্রার্থীকে আয়া পদে চাকরি দেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জান্নাত বেগম জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়াও পরিচ্ছন্ন কর্মী ও অফিস সহায়ক পদেও মোটা অঙ্কের লেন দেন হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী কলেজ পড়–য়া মারজাহান বেগম বলেন, স্যার আমাদের স্কুলে ডেকে নিয়ে একটি আবেদন পত্রে স্বাক্ষর নেন। বিষয়টি জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, জরুরী প্রয়োজনে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর স্যার আমাদের বাড়িতে থেকে ডেকে ল²ীপুরে নিয়ে আয়া পদে পরীক্ষা অংশ গ্রহণ করতে বলেন। স্যারের অনুরোধে আমরা পরীক্ষায় অংশ নেই।

আরেক কলেজ ছাত্রীর বাবা আবু তাহের বলেন, আমাকে না জনিয়ে আমার এইচএসসি পাশ মেয়েকে দিয়ে আয়া পদে পরীক্ষা অংশ গ্রহণ করানো হয়েছে। শিক্ষকের এমন খামখেয়ালীপনা খুবই দুঃখজনক। এমন অনিয়মের বিচার হওয়া উচিৎ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক আয়া, নিরাপত্তা কর্মী ও অফিস সহায়ক পদে টাকার বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়েছেন।

মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল আলমের কাছে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিধি মোতাবেক তিন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারী পরীক্ষায় পাশ করেনি। কলেজছাত্রী দিয়ে পরীক্ষার দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।

উপজেলা একাডেমীক সুপারভাইজার মো. আনোয়ার পারভেজ বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No widgets found. Go to Widget page and add the widget in Offcanvas Sidebar Widget Area.